বরিশাল অফিস:-
ওই এদিকে আয়, কোথা থেকে আইছো, কোথায় যাবি, এত রাতে কেন, এদিক দিয়ে না, ওই দিক দিয়ে যা, গাড়ির কাগজ দ্যাখা, গাড়ি থেকে নাম। এসকল কথাগুলো সাধারন পোশাক (সিভিল ড্রেস) পড়া অবস্থায় যদি একজন এসআই অথবা একজন ওসিকে কোন পুলিশ কনষ্টেবল বলে তখন কেমন হবে ? ঠিক এমনই একটি দৃশ্য দেখা গেল বরিশাল নগরীর জেলখানার মোড় নামক স্থানে। শুধু সাধারণ মানুষের সাথেই নয়, অনেক পুলিশ কর্মকর্তার সাথেও এমন আচরণ করে ‘সরি’ বলতে দেখা গেছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন এসআই মটর সাইকেল নিয়ে কোথাও যাচ্ছিল হঠাৎ করেই একজন পুলিশ কনষ্টেবল হাত জাগিয়ে বললো গাড়ি থামা। এসআই মটরসাইকেল থামিয়ে তার পরিচয় দেয়ার পরে পুলিশ কনষ্টেবল ছরি স্যার! এসআই লজ্জায় মাথানিচু করে চলে গেল। এমন আচরণ শুধু পুলিশের সাথেই নয় রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিকসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ লোকের সাথেই এমন আচরণ করে ফেলে বরিশালের কতিপয় কিছু পুলিশ সদস্যরা। পরিচয় পাওয়ার পর ছরি! শুধু পুলিশ কনষ্টেবলই না এমন অশোভণ আচরনে পিছিয়ে নেই এসআই/এএসআইরাও। অপরিচিত ব্যাক্তিকে দেখলেই অশোভন আচরন। পরিচিত হলে কি মধুর আলাপন! অথচ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একজন রিক্সা চালকের সাথেও অশোভণ আচরণ করেনা। বড় ছোট সকলের সাথেই শোভণীয় আচরণ করে তারা। যা দেখে অনেকেই মুগ্ধ হয়। রাতের বেলায় পেটের ক্ষুধায় রিক্সা চালকরা রিক্স নিয়ে নগরীতে বের হলে বৃদ্ধ অনেক রিক্সা চালকের সাথে অশোভণ আচরনে মত্ত হয় পুলিশ। ৬৫ বছর বয়সি রিক্সা চালক সোহরাব হোসেনের গায়েতো হাতই তুলে ফেললো একজন এসএসআই। এমন অভিযোগে পিছিয়ে নেই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরাও গাড়ি থামানোর আচরনই যেন অশোভোন। বগুড়ারোড সোনালী ব্যাংকের সামনে বসে সার্জেন্ট টুটুলতো এক যুবকের গায়ে হাতই তুলে ফেললো। বেশ কিছু দিন পূর্বে নতুন বাজার এলাকায় বসেও এক জনকে বেধম মারধরও করেছিলেন তিনি। প্রতিনিয়তই নগরীর সাধারন মানুষের সাথে এম অশোভণ আচরণ যেন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে উঠেছে কতিপয় পুলিশ সদস্যের। নগরীর চকবাজার এলাকায় ফুটপাতে বসে বিভিন্ন মৌসুমি ফল বিক্রি করে মালেক। হঠাৎ করে বরিশাল পুলিশ লাইনের মেহেদী হাসান নামের এক পুলিশ কনষ্টেবল এসে বলে ফেলে এখান থেকে ওঠ, এখানে বসতে নিষেধ করছিনা, তার পরেও বসছে কেন? বর্তমান সময়ের পুলিশ সদস্যদের দ্বারা এমন অশোভণ আচরণ কতটা কাম্য এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রবীণ সাংবাদিক এসএম ইকবাল বলেন, বর্তমান সময়ের পুলিশ সদস্যরা হবে শোভণীয়। বর্তমান সময়ের পুলিশ সদস্যদের দ্বারা মানুষ অশোভণ আচরণ কামনা করে না। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকেওতো তারা শিখতে পারে সাধারণ মানুষের সাথে কেমন আচরন করা উচিৎ। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাধারন মানুষের সাথে কেমন আচরন করে তা কি তারা দেখেনা? বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার এসএম রুহুল আমিন’র সাথে। তিনি বলেন-এমন ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এমন আচরণ করলে সাধারণ মানুষ পুলিশের উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলবে। তিনি আরও বলেন-পুলিশের উচিৎ মানুষের সাথে শোভণীয় আচরণ করা। তবে তিনি বিষটি সম্পর্কে খেয়াল রাখবেন বলেও মন্তব্য করেন পুলিশের চৌকস এ কর্মকর্তা। সাধারন মানুষের সাথে পুলিশের এমন অশোভণ আচরনের ফলে বিতর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পুলিশের আচরণে আসবে আন্তরিকতা, সাধারণ মানুষও প্রাপ্য হবে সুন্দর ব্যবহারের। পুলিশ জনগন হবে বন্ধু এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।
সূত্র:-বরিশাল ক্রাইম নিউজ
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply